ছয় মাস পর বাচ্চাকে খাওয়ানোর নিয়ম


আসসালামু আলাইকুম,দর্শক আজ আমরা আলোচনা করবো সবচেয়ে বেশি যে প্রশ্নটা আপনাদের মাঝে থেকে বেশি করা হয় তা হলো শিশু তো ছয় মাস পর্যন্ত মায়ের দুধ খেলো এরপর তাকে আমরা কি খাওয়াবো।এই বিষয়টি নিয়ে বাজারে অনেক কথা প্রচলিত আছে,সোশাল মিডিয়ায় অনেক ইনফরমেশন আপনারা জানতে পারেন যেগুলো নিয়ে মানুষ অনেক বিভ্রান্ত হয়,একেক জায়গায় একেক কথা বলা আছে।আমাদের আজকের বিষয়টি মূল বিষয় এইটাই।আমরা আপনাকে আজ যে সমস্ত উপদেশ দিবো আপনি আপনার বাচ্চাকে সেই অনুযায়ী খাওয়াবেন।

শুরু করার আগে আপনাদের জানিয়ে রাখি যে ছয় মাস পর বাচ্চার যে খাওয়ানোর প্রক্রিয়া সেটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।কারণ এতদিন বাচ্চাকে বুকের দুধ খাইয়েছেন বা ফর্মুলা মিল্ক খাইয়ছেন তাই কোনো সমস্যা হয়নি।কিন্তু ছয় মাস পর যখন আপনি আপনার বাচ্চাকে বাড়তি খাওয়ানো শুরু করবেন তখন সেই পরবর্তী একমাসের মধ্যেই আপনার বাবুর খাওয়ার বা ভবিষ্যতের তার খাওয়ার গতিপথ তৈরী হয়ে যাবে।তাই এই একমাস আপনাকে অত্যান্ত সতর্কতার সাথে খাবারের ব্যাপারে আস্তে আস্তে এবং অনেক ধৈর্যের সাথে খাবারের ব্যাপারে এগিয়ে যেতে হবে সেটা হতে হবে প্রপার নির্দেশনা অনুযায়ী।


আমরা জানি এই সময় বিভিন্ন জন বিভিন্ন রকম উপদেশ দেয়।আমাদের নিজেদেরও অভিজ্ঞতা আছে,সবারই মা-বাবাও আছে যারা বলে বাচ্চাকে এইটা খাওয়াও ওইটা খাওয়াও।যার কারণে বেশিরভাগ মায়েরা বাচ্চাকে খাওয়াতে গিয়ে ভুল করে ফেলে এবং বাচ্চার পাতলা পায়খানা হয় বা বিভিন্ন এলার্জির প্রবলেম শুরু হয়।তাহলে ছয় মাস পর্যন্ত আমরা জানি যে বাচ্চাকে দিনে ৮-১২বার খাওয়াতে হয় কিন্তু ছয় মাস পর অনেক মায়েরা জানেন যে দু ঘন্টা পরপর বাচ্চাকে খাওয়াতে হয় তাই এইসময় বাচ্চার আগের খাওয়ার যে প্রক্রিয়া সেটা পরিবর্তন করতে হবে।অনেকের তাই প্রশ্ন,এই সময়ে কি খাওয়াবেন।তাই এই সময়ে দুইটা খাবার এবং একবার নাসতা খাওয়াবেন যেমন কলা বা যেকোনো দেশি ফল খাওয়াবেন।

এখন প্রশ্ন হলো যে দুবার বাচ্চা খাবে সে কতটুকু করে খাবে তাহলে বাচ্চাকে প্রত্যেকবার হাফ বাটি করে করে এক বাটি করে প্রতিদিন খাওয়াবেন।বাটিটি হতে হবে যে ২৫০ গ্রাম এর যে বাটিগুলো থাকে সেই বাটি দিয়ে অর্ধেক বাটি করে দিনে দুবার শক্ত খাবার এবং একবার ফল খাওয়াবেন বা ফলের রস খাওয়াবেন।এসব খাওয়ানোর উদ্দেশ্য হলো শিশুকে বোঝানো যে বুকের দুধের পাশাপাশি পৃথিবীতে তার খাওয়ার জন্য আলাদা খাবারও রয়েছে।এই জন্য খুব ধীরে ধীরে বাচ্চাকে খাওয়ানোর প্রক্রিয়া চালাতে হবে।

এই প্রসঙ্গে আরও একটা কথা জানিয়ে রাখা জরুরি যে আপনি এই মুহূর্তে শিশুকে অল্প অল্প করে পানি খাওয়াতে পারবেন কিন্তু পানি হতে হবে ফুটন্ত। অর্থাৎ কল কিংবা ট্যাপ এর পানি খাওয়ানো যাবেনা ফোটানো পানি খাওয়াবেন অল্প অল্প করে আর খাবার খাওয়াবেন।


তো এখন আসা যাক এই যে আমরা দু'বেলা বাচ্চাকে খাওয়াবো।কি খাবার খাওয়াবো?অনেকেই বাচ্চাকে খাওয়ানো শুরু করেন খিচুড়ি দিয়ে এইটা কিন্তু ভুল ধারণা কারণ আপনার শিশু এই ছয় মাস একটা মিষ্টি খাবার খেয়ে অভ্যস্ত তাই তাকে হঠাৎ করে এরকম খাবার দিলে সে নাও খেতে পারে।অনেকেই খিচুড়িতে পাচমিশালি সবজি দেন এখন যদি আপনি সেই খিচুড়ি বাচ্চাকে খাওয়ান তাহলে আপনি বুঝতে পারবেননা আপনার বাচ্চার কোন খাবারে এলার্জি আর কোন খাবারে সে খেতে পছন্দ করে।তাই আপনার প্ল্যান হবে তিন দিন তিন দিন করে এগোনো।এজন্য আপনি আপনার বাচ্চাকে প্রথম তিন দিন ভাত খাওয়াতে পারেন।

অনেকেই প্রশ্ন করেন যে আমি আমার বাবুকে কবে থেকে খাওয়াতে পারবো অর্থাৎ কবে থেকে এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে পারবো।আমাদের মতে আপনার বাচ্চার ছয় মাস অর্থাৎ ১৮০দিন শেষ হবে আপনি ১৮১তম দিন থেকে বাচ্চাকে খাওয়াতে পারবেন।তাই বাচ্চার ১৮১ তম দিন থেকে আপনি বাচ্চাকে প্রথম তিন দিন ভাত খাওয়াতে পারেন আবার পরবর্তী তিন দিন ভাতের সাথে একটু ডাল নিতে পারেন এতে বাচ্চার কোনো প্রতিক্রিয়া হচ্ছে কি না সেটা লক্ষ্য করুন।পরবর্তী তিন দিনে একটু আলু দিলেন তার পরবর্তীতে একটা সবজি দিলেন।অনেকেই একসাথে দু তিন রকমের সবজি দেয় এতে বাচ্চার সমস্যা হয় কারণ সে এতদিন একটা মিষ্টি জাতীয় খাবার খেয়ে অভ্যস্ত ছিলো তাই বাচ্চাকে যখন সবজি খাওয়াবেন তখন মিষ্টি জাতীয় সবজি খাওয়ানো উচিৎ। এইভাবে সাড়ে ছয় মাস পর্যন্ত খাওয়াবেন এবং এতে যদি বাচ্চার কোনো প্রতিক্রিয়া না হয় তাহলে আপনি বাচ্চাকে ছয় থেকে আট মাস পর্যন্ত এভাবেই আধাবাটি করে দুবার এবং আট থেকে এগারো মাস পর্যন্ত আধা বাটি করে তিন বার এবং পরবর্তীতে কিভাবে খাওয়াবেন তা নিয়ে পরবর্তী আরও একটি প্রতিবেদন করা হবে আপনারা সেটার মাধ্যমেই জানতে পারবেন।

 অনেকেই জিজ্ঞেস করেন যে ফর্মুলা মিল্ক খাওয়ানো যাবে কি না সেক্ষেত্রে আমাদের পরামর্শ হলো যদি আপনার বাচ্চা পর্যাপ্ত পরিমাণে বুকের দুধ পায় তাহলে ফর্মুলা মিল্ক এর কোনো প্রয়োজন নাই।আপনি যদি দিনে ৬-১০বার বুকের দুধ খাওয়ান এইটাই বাচ্চার জন্য যথেষ্ট। তবে বাচ্চাকে যখন বাড়তি খাবার অর্থাৎ শক্ত খাবার খাওয়ানো শুরু করবেন তখন অনেক বাচ্চারই পাতলা পায়খানা হয়ে থাকে এটা নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কোনো কারণ নাই আপনাকে শুধু লক্ষ্য রাখতে হবে যে বাচ্চার কোনো এলার্জি হচ্ছে কি না কিংবা শ্বাস কষ্টের কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না।যদি এরকম হয় তাহলে আপনার ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করবেন।
 
আজ এ পর্যন্তই, পরবর্তীতে আবার নতুন কোনো টপিক নিয়ে হাজির হবো সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন।


related tag....Rules for feeding the baby after six months,
0 to 6 months baby food chart,
6 months baby food chart for indian,
৬ মাসের শিশুর খাবার রেসিপি,
বয়স অনুযায়ী শিশুর খাবার তালিকা,
শিশুদের যত্ন কিভাবে নিব,
শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ,

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন